15.
📒ভারতীয় সংবিধান :-1949 সালের 26 নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয় তা কার্যকর হয় 1950 সালের 26 জানুয়ারি ।
📒 সংশোধন পদ্ধতির নিরিখে ভারতীয় সংবিধানের প্রকৃতি বিচার:-সংশোধন পদ্ধতির দ্বারা কোনো দেশের সংবিধানকে সুপরিবর্তনীয় এবং দুষ্পরিবর্তনীয় অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। যে সংবিধানকে সাধারণ আইন পাশের পদ্ধতি অনুযায়ী সহজে পরিবর্তন করা যায় তাকে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। অন্যদিকে যে সংবিধান পরিবর্তন করতে যেখানে অপেক্ষাকৃত বিশেষ ও জটিল পদ্ধতির দ্বারা হয়ে থাকে তাকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। ভারতীয় সংবিধানে যে সুরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয়তার যে সংমিশ্রণ ঘটেছে তার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করলেই ভালো ভাবে বোঝা যায়।
ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি:-
ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলি হল-
সরল পদ্ধতি, আংশিক জটিল পদ্ধতি এবং জটিল পদ্ধতি।
1)সরল পদ্ধতি:-সংবিধানের অন্তর্গত কয়েকটি বিষয়কে অত্যন্ত সরল পদ্ধতিতে
সংশোধন করা যায়। যেখানে সাধারণ আইন পাশের পদ্ধতিতে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের মাধ্যমে সংবিধান সংশোশোধিত হয়। নতুন রাজ্যের সৃষ্টি বা পুরানো রাজ্যের সীমানা বা নাম পরিবর্তন, বিধান পরিষদ সৃষ্টি বা বিলোপ, সুপ্রিমকোর্টের কার্যাবলীর এলাকা সম্প্রসারণ প্রভৃতি বিষয় এই পদ্ধতিতে সংশোধীত হয়।
2)আংশিক জটিল পদ্ধতি :- সংবিধানের কিছু নির্দিষ্ট অংশের সংশোধনের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের মোট সদস্যদের অর্ধেকের বেশি এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থনের প্রয়োজন হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে সংবিধানের তৃতীয় ও চতুর্থ পরিচ্ছেদে আলোচিত যথাক্রমে মৌলিক অধিকার ও নির্দেশমূলক নীতিগুলিকে পরিবর্তন বা সংশোধন করা হয়।
3) জটিল পদ্ধতি:-এই পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রথমে সংশোধনী প্রস্তাবটিকে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের মোট সদস্যদের অধিকাংশ এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের দুই তৃতীয়াংশ কতৃক সমর্থিত হতে হবে। এরপর প্রস্তাবটিকে রাজ্যআইনসভার অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হয়। এক্ষেত্রে অন্তত অর্ধেক রাজ্য আইনসভার অনুমোদন আবশ্যক। যে সমস্ত বিষয় এই পদ্ধতিতে সংশোধীত হয় তার মধ্যে রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আইন-সংক্রান্ত ক্ষমতার বণ্টন, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে শাসন-সংক্রান্ত ক্ষমতার পরিধি প্রভৃতি।
উপসংহার:- ভারতের সংবিধান সংশোধন উপরোক্ত তিনটি পদ্ধতি পর্যলোচনা করলে জানা যায় যে, আমেরিকার মতো অতিমাত্রায় দুষ্পরিবর্তনীয় ও ব্রিটেনের মতো সুপরিবর্তনীয় কোনোটাই নয়। বরং এখানে দুরকমের সংশোধনীর সংমিশ্রণ ঘটেছে। তাই k. C whore এর মতে ভারতীয় সংবিধান হল একটি ভালমতো নির্দেশিত ও সমতাবজায়কারি সংবিধান।