Friday, September 17, 2021

ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকার গুলি লিপিবদ্ধ করার কারণ গুলি কি জরুরি অবস্থা ঘোষিত হলে ভারতীয় নাগরিকরা কি মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারেন?

 9.

ভারতের সংবিধানে মৌলিক অধিকারসমূহকে লিপিবদ্ধ করার কারণ



মৌলিক অধিকারগুলিকে সংবিধানে লিপিবদ্ধ করার প্রয়ােজন আছে কি না সেসম্পর্কে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা একমত নন। ভারতের সংবিধানে মৌলিক অধিকারগুলিকে লিপিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কারণগুলি দেখানাে হয়



[1] গণতান্ত্রিক অধিকারের সংরক্ষণ: সংবিধান-বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলিকে সংরক্ষণ করার জন্য মৌলিক অধিকারগুলিকে লিপিবদ্ধ করা জরুরি। মৌলিক অধিকার লিপিবদ্ধ হওয়ার ফলে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ সেগুলির বাস্তব রূপায়ণে বাধ্য থাকে। শুধু তাই নয়, আদালতও মৌলিক অধিকারগুলির তত্ত্বাবধানের জন্য উপযুক্ত দায়িত্ব পালন করে। অনেকে মনে করেন যে, নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকে বলে শাসকগােষ্ঠী বা ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে এগুলির ওপর অযথা হস্তক্ষেপ করা সম্ভব হয় না। সংবিধানে উল্লিখিত থাকে বলেই মৌলিক অধিকারগুলি সুরক্ষিত থাকে



[2] গণচেতনার সৃষ্টি: সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌলিক অধিকারগুলি সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে বলেই জনগণ নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকার সুযােগ পায়। অধিকারগুলির বাস্তব প্রয়ােগ এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে তাদের একটা স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়



[3] সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা: মৌলিক অধিকারগুলি সংবিধানে লিপিবদ্ধ হওয়ায় সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষিত হয় বলে অনেকে মনে করেন। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনব্যবস্থা। এক্ষেত্রে মৌলিক অধিকারগুলি লিপিবদ্ধ না থাকলে সংখ্যালঘুদের স্বার্থহানির আশঙ্কা থাকে



[4] আইনের মর্যাদালাভ: দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকার ফলে নাগরিক অধিকারগুলি মৌলিক আইনের মর্যাদা লাভ করে। এর ফলে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংঘ, সমিতি, এমনকি সরকার পর্যন্ত মৌলিক অধিকারগুলির মর্যাদা সংরক্ষণে বাধ্য হয়। তা ছাড়া সংবিধানে লিপিবদ্ধ হওয়ায় মৌলিক অধিকারগুলি আদালতের কাছেও বিশেষ মর্যাদা অর্জন করে



জরুরি অবস্থায় মৌলিক অধিকারগুলির বৈধতা



সংবিধানের ৩৫২নং ধারা অনুযায়ী জরুরি অবস্থা ঘােষিত হলে ১৯নং ধারায় উল্লিখিত স্বাধীনতার অধিকারগুলির ওপর যে-কোনাে বিধিনিষেধ আরােপ করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের রয়েছে। ছাড়া ৩৫৯নং ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি জনগণের মৌলিক অধিকার বলবৎকরণের উদ্দেশ্যে শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকারটি স্থগিত রাখার আদেশ দিতে পারেন

মৌলিক অধিকারের সংজ্ঞা দাও এবং প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। ইতিবাচক ও নেতিবাচক মৌলিক অধিকার কাকে বলে?

 8.

মৌলিক অধিকারের সংজ্ঞা



মানবজীবনের মৌলিক প্রয়ােজনগুলি যেসব অধিকারের সাহায্যে পূরণ হয়ে থাকে সেগুলিকে মৌলিক অধিকার বলে অভিহিত করা হয়। মৌলিক অধিকার বলতে সাধারণভাবে সেইসব অধিকারকে বােঝায় যেগুলি নাগরিকদের ব্যক্তিসত্তার বিকাশে একান্তভাবে অপরিহার্য। এই কারণে মৌলিক অধিকারগুলি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত সংরক্ষিত হয়। অধ্যাপক জোহারির ভাষায়, "A fundamental right may be defined as an interest protected by the higher law of land". (মৌলিক অধিকার হল এমন এক ধরনের অধিকার যা দেশের সর্বোচ্চ আইনের দ্বারা সুরক্ষিত)



মৌলিক অধিকারের প্রকৃতি



সংবিধান বিশেষজ্ঞ দুর্গাদাস বসুর বক্তব্য হল, সাধারণ অধিকারগুলিকে যেভাবে সংসদে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভােটের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায়, মৌলিক অধিকারগুলিকে সেভাবে পরিবর্তন করা যায় না। এই কারণে এই অধিকারগুলিকে মৌলিক বলা হয়। মৌলিক অধিকারগুলিকে পরিবর্তন করতে গেলে সংবিধান সংশােধন করতে হয়, সংবিধান সংশােধন ছাড়া মৌলিক অধিকার পরিবর্তন করা যায় না৷ ১৯৫০ সালে কে গােপালন বনাম মাদ্রাজ রাজ্য মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি পাতঞ্জলি শাস্ত্রী বলেন, মৌলিক অধিকারগুলি এই কারণে মৌলিক যে এগুলি শাসন বিভাগ আইন বিভাগের এক্তিয়ারের বাইরে রয়েছে। মৌলিক অধিকারগুলি সংবিধান কর্তৃক সংরক্ষিত এবং আদালত কর্তৃক বিশেষভাবে বলবৎযােগ্য। স্বাভাবিক অবস্থায় সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের ৩২নং ধারা অনুসারে এবং হাইকোর্ট ২২৬নং ধারা অনুসারে লেখ (Writ), নির্দেশ (Direction) আদেশ (Order) জারি করে মৌলিক অধিকার বলবৎ করার ব্যবস্থা নিতে পারে। কেন্দ্র বা রাজ্য আইনসভার কোনাে আইন সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলির বিরােধী হলে সেই আইনকে বাতিল করে দিয়ে মৌলিক অধিকারগুলির পবিত্রতা রক্ষার দায়িত্ব আদালতের হাতে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ অধিকারগুলিকে এই ধরনের কোনাে মর্যাদা দেওয়া হয় না। সাধারণ অধিকারগুলি সাধারণ আইন দ্বারা সংরক্ষিত হয়



ইতিবাচক মৌলিক অধিকার



যে অধিকারগুলির মাধ্যমে নাগরিকদের সুস্পষ্টভাবে কয়েকটি সুযােগসুবিধা দেওয়া হয়েছে সেগুলি ইতিবাচক মৌলিক অধিকার। যেমনমতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার প্রভৃতি



নেতিবাচক মৌলিক অধিকার



যে অধিকারগুলি রাষ্ট্রের ওপর বাধানিষেধ আরােপের মাধ্যমে নাগরিকদের স্বাধীনতা ভােগে সাহায্য করে তাদের নেতিবাচক অধিকার বলা হয়। যেমন, রাষ্ট্র কোনােভাবেই জীবন ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার কেড়ে নিতে পারে না

@মানবাধিকারের বৈশিষ্ট্যগুলির পর্যালোচনা করো। অথবা মানবাধিকারের সংজ্ঞার্থ দাও। অথবা মানবাধিকার এবং অন্যান্য অধিকারের মধ্যে পার্থক্য করো।

 7.

🔶মানবাধিকারের মূল বৈশিষ্ট্য

মানবাধিকার হল এমন একঅধিকার যা জন্মসূত্রে সব মানুষের সমানাধিকার ও সমমর্যাদার নীতি ঘোষণা করে। আবার জাতিপুঞ্জের  সনদের ভাষানুযায়ী, মানবাধিকার হল সেই সমস্ত অধিকার রা জাতি, ধর্ম, বর্ণ,জন্মস্থান ও সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে প্রতিটি ব‍্যক্তিকে আত্মমর্যাদার সঙ্গে জীবনধারণের অধিকার ও স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার প্রদান করে। এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকারের যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য এর সন্ধান পাওয়া যায় সেগুলি হল-

1)মানবাধিকার মানুষের জন্মগত সহজাত অধিকার, 

2)মানবাধিকার এর মাধ্যমেই মানুষ নিজের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে পারে, 

3)মানব অধিকার একটি বিশ্বজনীন অধিকার, 

4)মানবাধিকারের আদর্শ ব্যক্তির কল্যান নয়, 

5)সমষ্টির কল্যাণ সদা জাগ্রত জনতা মানবাধিকারের শ্রেষ্ঠ রক্ষাকবচ, 

6)নৈতিক মূল্যবোধ মানবাধিকারের মূলভিত্তি মানবাধিকারের কোন আইনগত ভিত্তি নেই।

🔶🔶মানবাধিকার এবং অন্যান্য অধিকারের মধ্যে পার্থক্য


আপাতদৃষ্টিতে মানবাধিকার ও অন্যান্য অধিকার উভয়ই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের পক্ষে সহায়ক সেদিক থেকে এই দুই অধিকারকে অভিন্ন বলে ধরা যেতে পারে তবে মানবাধিকারের সঙ্গে অন্যান্য অধিকারের কয়েকটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে সেগুলি হল-

(উদ্ভব সার্বজনীনতা জাতীয় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক নজরদারি আইনগত বাধ্যবাধকতা কমিশনের ভূমিকা আদালতের ভূমিকা)

🔸মানবাধিকারের ধারণা জন্ম হয় বিংশ শতাব্দীর চারের দশকে।

🔸মনুষ্যত্বের অধিকার রক্ষার উদ্দেশ্যে মানবাধিকারের ধারণা উপর গুরুতর হয় এই কারণে মানবাধিকারের প্রকৃতি সর্বজনীন।

🔸মানবাধিকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এই আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি অর্জন করে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সর্বজনীন মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশ্বজনীন ঘোষণায়  1948 সালের 10 ডিসেম্বর মানব অধিকার কে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়া হয়।

🔸মানব অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য আন্তর্জাতিক নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে 1993 সালের মানবাধিকার সম্পর্কিত বিশ্ব সম্মেলন গৃহীত ভিয়েনা ঘোষণাপত্র ও কর্মসূচিতে বলা হয় মানবাধিকার কে উৎসাহ দেওয়া ও তার সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক মহলের একটি দায়িত্ব।

🔸মানবাধিকার রূপায়নের ক্ষেত্রে কোন ধরনের আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। মানবাধিকার একটি নৈতিক অধিকার।

🔸মানবাধিকারের বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় স্তরে মানবাধিকার কমিশন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। জাতিপুঞ্জের অধীনে মানবাধিকার হাইকমিশনারের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য জাতীয় স্তরে বিভিন্ন দেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠন করেছে।

🔸মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে সেই সংক্রান্ত অভিযোগ সরাসরি আদালতে পেশ করা যায় না এ জন্য মানব অধিকার কমিশন বা কমিটির কাছে আবেদন জানাতে হয়।

Othr 

🔹সাধারণ অধিকারের ধারণার উদ্ভব ঘটে সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ দিকে।

🔹রাষ্ট্রীয় আইন দ্বারা সংরক্ষিত সাধারণ অধিকার শুধুমাত্র সেই রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট জনসমষ্টির পক্ষেই ভোগ করা সম্ভব। তাই সাধরন অধিকারকে কোনভাবেই সার্বজনীন আখ্যা দেয়া যায় ন।

🔹 সাধারণ অধিকারের ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেখা যায় না। সাধারণ অধিকার কেবল জাতীয় ক্ষেত্রে নিজের রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ডের সীমানায় স্বীকৃতি পায়।

🔹অন্যান্য অধিকারের ক্ষেত্রে কোন আন্তর্জাতিক নজরদারির কথা রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের কারণে কল্পনা করা যায় না। সাধারণ অধিকারের সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্র নিজেই নজরদারি করে থাকে।

🔹রাষ্ট্রীয় এক্তিয়ারের অধীন মৌলিক অধিকারগুলি সংবিধান কতৃক বিধিবদ্ধ থাকে বলেতার আইনগত বাধ‍্যবাধকতা লক্ষ করা যায়। নাগরিক অধিকার সম্পূর্ণভাবে আইন নির্ভর।

🔹সাধারণ অধিকারের রক্ষণাবেক্ষণ বা তার রূপায়ণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কমিশনের ভূমিকা লক্ষ করা যায় না।

🔹যেসব সাধারণ অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ হওয়ার কারণে মৌলিক অধিকারের মর্যাদা লাভ করেছে তা লঙ্ঘিত হলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিচার বিভাগ বা শীর্ষ আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।

উপসংহার:-  মানবাধিকার ও অন্যান্য অধিকারের মধ্যে প্রকৃতিগত পার্থক্য রয়েছে। তবে মানবাধিকার সভ‍্য দুনিয়ার মনুষ্যত্বের অধিকার রক্ষার ব‍্যাপারে এক মহত্তম বিশ্বজনীন আদর্শের অঙ্গীকার।






অধিকারের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। অধিকার সম্পর্কে মার্কসীয় ধারনা কি?

6.

⭕অধিকারের সংজ্ঞা:- হ্যারল্ড লাস্কির মতে, অধিকার হলো সমাজ জীবনের সেই সব সুযোগ-সুবিধা যেগুলি ছাড়া কোন ব্যক্তি সাধারণভাবে তার ব্যক্তিত্বের প্রকৃষ্টতম বিকাশ ঘটাতে পারে না।

বার্কারের মতে, সবচেয়ে অধিক সংখ্যক লোকের সর্বাধিক বিকাশসাধনের।। জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা বা শর্ত আইন কর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হয় তাকে অধিকার বলে। বার্কারের বিশ্লেষণ অনুযায়ী দুটি শর্ত পূরণ করলে কোনো সুযোগ-সুবিধা কে অধিকার বলে অভিহিত করা যেতে পারে-

1) সুযোগ সুবিধাগুলি প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব বিকাশের সহায়ক হবে এবং

 2)সুযোগ সুবিধাগুলি রাষ্ট্রকর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হবে।

⭕অধিকারের প্রকৃতি:- অধিকার এর প্রকৃতি বিশ্লেষণে বলা যায় যে,

1) শুধুমাত্র সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে ব্যক্তি অধিকার ভোগ করতে পারে। মানব সমাজের বাইরে অধিকারের কোন কর্তৃত্ব নেই। 

2)অধিকারের একটি আইনগত দিক আছে। রাষ্ট্র আইনের মাধ্যমে অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে।

3) সমাজের সমস্ত মানুষের ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য অধিকার অপরিহার্য।

4) সমাজকল্যাণের সঙ্গে অধিকারের ধারণা জড়িত থাকে। বস্তুত, অধিকার সামাজিক স্বার্থের বিরোধী হওয়া উচিত নয়।

5) সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের সঙ্গে অধিকার পরিবর্তিত হয়।

6) অধিকারের সঙ্গে কর্তব্য সম্পাদনের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কর্তব্য পালন না করলে অধিকার ভোগ করা যায় না।

আবার প্রকৃতিগতভাবে অধিকার কে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে একটি হলো নৈতিক অধিকার ও অপরটি হল আইনগত অধিকার।

🔺!) নৈতিক অধিকার:- যে সমস্ত অধিকার সামাজিক ন্যায়-নীতি বোধের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, তাদের নৈতিক অধিকার বলা হয়। প্রসঙ্গত, নৈতিক অধিকার ভঙ্গ করলে রাষ্ট্র কোন শাস্তি দিতে পারেনা। নৈতিক অধিকার রাষ্ট্রের দ্বারা স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত নয়।

🔺!!)আইনগত অধিকার:-আইনের মাধ্যমে শিক্ষিত হোক এবং সংরক্ষিত হয় যে সমস্ত অধিকার, তাদের আইনগত অধিকার বলে। এই অধিকার ভঙ্গ করলে রাষ্ট্র শাস্তি দিতে পারে। যেমন ভোটদান করার অধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধিকার। এই অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করলে রাষ্ট্র তাকে শাস্তি দিতে পারে। আইনগত অধিকার কে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল-

!)পৌর অধিকার,

!!)রাজনৈতিক অধিকার,

!!!)অর্থনৈতিক অধিকার, 

!v)সামাজিক ও কৃষ্টিগত অধিকার।

⭕অধিকার সম্পর্কে মার্কসীয় ধারনা:-মার্কসীয় মতবাদ অনুযায়ী, অধিকার সমাজচরিত্রের অর্থনৈতিক বিন্যাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গড়ে ওঠে। মানুষের অধিকারের প্রকৃতি উৎপাদন পদ্ধতির সঙ্গে তার সম্পর্কের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। বৈষম্যমূলক সমাজে অধিকার হলো উৎপাদন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী মালিক শ্রেণীর অধিকার। একমাত্র শোষনহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অধিকার রক্ষা সম্ভব হয়।