5.
অধিকারের রূপভেদ
প্রকৃতিগতভাবে অধিকারকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 1)নৈতিক অধিকার ও 2)আইনগত অধিকার।
1)নৈতিক অধিকার:- যেসব অধিকার সামাজিক ন্যয়নীতিবোধের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, তাদের নৈতিক অধিকার বলা হয়।তবে নৈতিক অধিকার রাষ্ট্রীয় আইনের দ্বারা স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত নয়।
2) আইনগত অধিকার:- যেসব অধিকার রাষ্ট্রীয় আইনের দ্বারা স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত , সেগুলিকে আইনগত অধিকার বলে।
এই আইনগত অধিকার চার প্রকারের।ঐ চার প্রকার অধিকার নম্নে আলোচিত হল-
1) পৌর অধিকার:- সুযোগ-সুবিধাযুক্ত মানুষের সুস্হ সামাজিক জীবন-যাপনই হল পৌর অধিকার।
মানুষের বাঁচার জন্য আত্মরক্ষা ও আত্মরক্ষার তাগিদেই বলপ্রয়োগের অধিকার এবং এই আত্মরক্ষার জন্যই সবাইয়ের প্রয়োজন ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার যেখানে সে তার চিন্তা ও মতপ্রকাশে স্বাধীনতা, সমিতি গঠন,বৃত্তি অবলম্বন, বসবাস, সভাসমাবেশে যোগদান, বিনা বিচারে গ্রেফতার বা আটক না হওয়া। সম্পত্তির ভোগ-দখল,ক্রয়বিক্রয়ের জন্য সম্পত্তির অধিকার। ধর্মীয় বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও প্রচার ও ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনে হস্তক্ষেপ না করা। শিক্ষার সুযোগ সুবিধা পাওয়া, সুখী ও সমৃদ্ধ পরিবার গঠন,ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অন্য যে কোন বিষয়ে যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়াই হল পৌর অধিকার।
2)রাজনৈতিক অধিকার:- রাষ্ট্রের কাজকর্মে নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণের পূর্ণ সুযোগ সুবিধা হল রাজনৈতিক অধিকার।
আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সার্বিক প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার হল রাজনৈতিক অধিকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার যেখানে স্ত্রী-পুরুষ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক ভোট দিতে সক্ষম সাথে সাথে নাগরিকরা নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার অধিকার অনুযায়ী প্রার্থীও হতে পারবে। অন্যদিকে প্রতিটি নাগরিক সরকারি চাকরির আবেদন পত্র বিভিন্ন রকম রাষ্ট্রের সমালোচনার অধিকারীও হওয়ার পাশাপাশি জনস্বার্থ রক্ষায় সৌরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধও করতে পারবে।
3)অর্থনৈতিক অধিকার:- দৈনন্দিন জীবনকে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ করে তোলা এবং দারিদ্র্য ও অনিশ্চয়তা দূরীকরণই হল অর্থনৈতিক অধিকার।
অর্থনৈতিক অধিকার অর্থাৎ আয়ের জন্য অধিকার, যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তির যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাওয়া প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকদের যোগ্যতা অনুসারে উপযুক্ত কাজ পেতে সাহায্য করা রাষ্ট্রের কর্তব্য আবার কাজের সাথে সাথে উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাওয়া ও তাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে সেখানে কাজের জন্য সময় নির্ধারণ করা এবং বার্ধক্যে যখন সে অক্ষম হয়ে পড়ে তখন তার প্রতি নিরাপত্তা প্রদান করা প্রকৃতি ও অর্থনৈতিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।
4)সামাজিক ও কৃষ্টিগত অধিকার:- সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে এবং সমাজের আচার-অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে মানুষের অপরিহার্য অধিকারটি হল সামাজিক ও কৃষ্ঠিগত অধিকার।
স্ত্রী-পুরুষ ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও উন্নয়নে সামাজিক সাম্যের অধিকারের পাশাপাশি জীবন যাপনের জন্য সুস্থ জীবন যাপনের অধিকার স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য স্বাস্থ্য রক্ষার অধিকার এবং অতিরিক্ত কাজ করিয়ে বেশি শুসিত না হওয়ার জন্য শোষণমুক্তির অধিকার এছাড়া প্রতিটি ব্যক্তির নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতির ও প্রতিটি সম্প্রদায়ের ভাষা সংস্কৃতি বিকশিত হওয়ার জন্য ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার, সামাজিক ও কৃষ্টি গত অধিকারকে এক বিশেষ অবদান রাখে।
No comments:
Post a Comment