Wednesday, August 15, 2018

ten bengali

কমবেশি ২০টি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
২.১। শমীবৃক্ষমূলে’ শমী কী? তার মূলে কী ঘটেছিল?
‘শমী সাঁই অর্থাৎ একপ্রকার কাঁটা গাছ। মহাভারতের ব্যাখ্যা অনুসারে এই বৃক্ষে পাণ্ডবগণ অস্ত্র লুকিয়ে রেখে রাজার গৃহে যান।
২.২। দিগন্তরের কাঁদন লুটায়’– কথাটি দিয়ে কৰি কী বােঝাতে চেয়েছেন?
দেবাদিদেবের ত্রস্ত জটার পিঙ্গল বর্ণ দেখে মনে হয় জগতের সমস্থ দুঃখ-বেদনা-কান্নাকে যেন তিনি জটায় ধারণ করে বিশ্বকে দুঃখ মুক্ত। করতে চেয়েছেন।
২.৩। এ মায়া, পিতঃ, বুঝিতে না পারি !- কে, কাকে, কেন একথা বলেছেন?
ইন্দ্রজিৎ, রাবণকে বলেছেন। গত রাতে রামকে তিনি বধ করেন, কিন্তু সে আবার বেঁচে ওঠে, তার এই বেঁচে ওঠাকেই মায়া বলা হয়েছে।
২.৪। সর্বনাশী জ্বালামুখী ধূমকেতু’- এই সর্বনাশী জ্বালামুখী’ কাকে কেন চামর দুলিয়ে আহ্বান জানিয়েছে?
‘সর্বনাশী জ্বালামুখী’ ধূমকেতু ভয়ঙ্করকে চামর দুলিয়ে আহ্বান। জানিয়েছে কারণ সে এসে সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যাবে, যার পরে আবার নতুন এক ভারতের জন্ম হবে।
২৫। হরিদার অর্থনৈতিক অবস্থা স্বচ্ছল ছিল না কেন?
ঘড়ির কাঁটা ধরে কোনও চাকরি বা কোনও দোকানে কাজ করা হরিদার পক্ষে সম্ভব নয়, তাই কোনওদিন তার অভাব ঘােচেনি।
২.৬। সন্ন্যাসী কখন জগদীশবাবুর দিকে পা এগিয়ে দিলেন?
নতুন খড়মে সােনার বােল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরলে সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর দিকে পা এগিয়ে দিলেন।
২৭। জগদীশৰাৰু চটিয়া কহিলেন, দয়ার সাগর’- কাকে, কেন দয়ার সাগর বলা হয়েছে?
গিরীশ মহাপাত্রকে দয়ার সাগর বলা হয়েছে। কুড়িয়ে পাওয়া গাঁজার কলকেটি পকেটে রেখেছে অন্যকে সেজে দেওয়ার জন্যই এই যুক্তি শুনে জগদীশবাবু তাচ্ছিল্য করে তাকে দয়ার সাগর বলেছেন।
২.৮। এই জানােয়ারটিকে ওয়াচ করবার দরকার নেই'- লােকটিকে জানােয়ার বলেছেন কেন?
লােকটিকে অর্থাৎ গিরীশ মহাপাত্র ওরফে সব্যসাচী মল্লিককে। জানােয়ার বলার কারণ তার অদ্ভুত বেশভূষা বিশেষ করে রুমালের অবস্থান, মােজা এবং নেবুর তেলের তীব্র গন্ধ-- এ সব দেখেই জগদীশবাবু তাকে জানােয়ার সম্বােধন করেছেন।
২.৯। তৈলচিত্র’- ব্যাসবাক্য সহ সমাসের নাম লেখাে।
তৈলচিত্র : তৈল দ্বারা আঁকা চিত্র- মদ্যপদলােপী কর্মধারয় সমাস। ২.১০। অল্পশিক্ষিত’-ব্যাসবাক্য সহ সমাসের নাম লেখাে।
অল্পশিক্ষিত : অল্প শিক্ষা যার সাধারণ বহুব্রীহি সমাস।।
২.১১। উদাহরণ দিয়ে সমস্যমান সহায়ক পদ কী তা বুঝিয়ে দাও।
সমাসবদ্ধ পদে উপস্থিত নেই অথচ তাকে ছাড়া ব্যাসবাক্য বিশ্লেষণ সম্ভব হয় না, এমন পদকে সমস্যমান সহায়ক পদ বলে। যেমনশাখা-প্রশাখা’, ‘শাখা ও প্রশাখা’ | সমাসবদ্ধ পদেও উপস্থিত নেই অথচ তাকে ছাড়া ব্যাসবাক্য বিশ্লেষণ সম্ভব নয়, তাই ও-কে বলা হবে সমস্যমান সহায়ক পদ।
৩। প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কম-বেশি ৬০ শব্দে যে কোনাে একটি প্রশ্নের
৩x১= ৩ উত্তর দাও।
৩.১।‘হেন কালে প্রমীলা সুন্দরী’– প্রমীলা কখন এসেছিল? তিনি আসায় পটের কী কোনও পরিবর্তন ঘটেছিল? ১+২ = ৩
মহাবলী ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধ সাজে সজ্জিত হয়ে রথে চড়েছেন এমন সময় ত্রস্ত প্রমীলা সেখানে উপস্থিত হন। এসে তিনি প্রাণসখাকে জড়িয়ে ধরে কালযুদ্ধে যেতে বাধা দেন। উত্তেজনা প্রশমিত করে সস্নেহে শান্ত মেজাজে প্রাণনাথ ইন্দ্রজিৎ পত্নীকে বুঝিয়ে বলেন তার বাঁধন ছিন্ন করার ক্ষমতা ইন্দ্রজিতের নেই, কিন্তু তার ও স্বর্ণলঙ্কার মান রক্ষা করতেই তিনি যুদ্ধে যাচ্ছেন। অতি শীঘ্রই তিনি শত্রুকে বধ করে ফিরবেন। প্রমীলার কাছে বিদায় নিয়ে উচ্চরব তুলে লঙ্কা সহ জল-স্থল-আকাশ-বাতাস কম্পিত করে ইন্দ্রজিতের রথ উঠল আকাশপথে।
3.2। যাঁকে খুঁজছেন তার কালচারের কথা একবার ভেবে দেখুন। কে, কাকে খুঁজছেন? তার কী ধরনের কালচারের কথা বলা হয়েছে?
দারােগা নিমাইবাবু বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে খুঁজছেন।
উচ্চশিক্ষিত বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরীশ মহাপাত্র একসময়ে পুনা এবং সিঙ্গাপুর জেলে আটক ছিলেন। তিনি জার্মানিতে চিকিৎসা শাস্ত্র, ফ্রান্সে যন্ত্রবিদ্যা, ইংল্যান্ডে আইন পড়েছেন এবং আমেরিকা থেকেও উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন এমন মানুষের কালচারের কথাই অপূর্ব তার আত্মীয় পুলিশ কর্তা নিমাইবাবুকে স্মরণ করিয়েছে।
৪। কম-বেশি ১৫০ শব্দে নিজের ভাষায় উত্তর দাও। (যে কোনাে একটি)
৪.১। বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলাে আনাই বজায় আছে--বাবুটি কে? তার স্বাস্থ্য ও শখের পরিচয় দাও। ১+৪ = ৫
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী' উপন্যাসের পথের দাবী।
পাঠ্যাংশের বাবুটি হল বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরীশ মহাপাত্র।নিমাইবাবু অপূর্বকে গিরীশ মহাপাত্রের পােশাক-আশাক প্রসঙ্গে কথাটি বলেছেন। লােকটির স্বাস্থ্য রােগা, একটু কাশলেই হাঁপাতে থাকে। যেন দুরারােগ্য কোনও ব্যাধিতে ভুগছে, এ ভব সংসারে বােধ হয়। তার আয়ু তার বেশিদিন নাই। কিন্তু এই রােগা মুখেও অদ্ভুত তার দুটি চোখের দৃষ্টি। ওই দুটি চোখের কোঠরের মধ্যেই যেন তার প্রাণ ভ্রমরা লুকিয়ে আছে, যেখানে যমও প্রবেশ করতে পারে না। গিরীশ মহাপাত্রের পােশাক-আশাকের বাহার ও পারিপাট্য দেখলেই তার শখের পরিচয় পাওয়া যায়। মাথার সামনের দিকে চুল বড়াে, কানের পাশ এবং পিছনের দিকে একেবারে ছােটো, চেরা সিথি তাতে অপর্যাপ্ত নেবুর তেল- যার গন্ধে ঘর ভরে গিয়েছে। গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি, বুকপকেটে বাঘ আঁকা রুমালের কিয়দাংশ বেরিয়ে আছে, পরনে বিলিতি মিলের কালাে মকমল পাড়ের সুক্ষ্ম শাড়ি। হাঁটু পর্যন্ত সবুজ মােজা, হাঁটুর উপরে লাল ফিতে দিয়ে তা বাঁধা, বার্নিশ করা পাম্প শু, তলাটা মজবুত করার জন্য চারপাশে লােহার নাল বসানাে। হাতে হরিণের শিঙের হাতলওয়ালা বেতের ছড়ি, কয়েকদিন জাহাজে কাটানােয় তার সব কিছুতেই ময়লা ধরেছে। ছদ্মবেশের খাতিরে তার এই পােশাক ছদ্মবেশকে যে বিশ্বাসযােগ্য করতে পেরেছিল, তা প্রমাণ করে অপুর্বর উদ্দেশে নিমাইবাবুর প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি।
৪.২। হুরূপী' গল্প অবলম্বনে হরিদার চরিত্র আলােচনা করাে। ৫
গল্পকার সুবােধ ঘােষ তার বহুরূপী গল্পে অপূর্ব মমত্বে হরিদা চরিত্রটি গড়ে তুলেছেন। এক অতি সাধারণ মানুষ হরিদা, পেশায় বহুরূপী, শিল্পী, কিন্তু তাঁর জীবনদর্শন অন্যান্য সাধারণ মানুষের থেকে অনেকটাই আলাদা। শহরের এক এঁদো গলিতে একটি ছােট্ট ঘরে হরিদা থাকেন। তিনি অল্পবয়সিদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে অবসর সময়টা কাটিয়ে দেন। হরিদার চরিত্রের বিশেষ কয়েকটি দিক যা হরিদাকে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের থেকে পৃথক করেছে প্রথমত, যে কাজ তিনি করেন অত্যন্ত মনােযােগের সঙ্গে করেন। বহুরূপীর সাজে অর্থাৎ রূপসী বাইজি, পাগল, কাপালিক, ফিরিঙ্গি প্রভৃতি যেদিন যা সেজে পথে বের হন সেদিন সেই অভিনয়টা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা করেন। দ্বিতীয়ত, অল্পবয়সি ভিন্ন গােত্রীয়দের সঙ্গে আর দেওয়ার সময়েও তিনি তার পেশা ও অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থার কথা মাথায় রেখেই মাত্রা রেখে আড্ডা দেন। তৃতীয়ত, শিল্পী-সাহিত্যিক-কলাকুশলীদের জীবন যেন হওয়া দরকার হরিদারও তা আছে। অর্থাৎ ছকে বাঁধা জীবন ও জীবিকা থেকে তিনি অনেক দূরে থাকেন। চতুর্থত, দারিদ্রকে তিনি বরণ করে নিয়েছেন। হরিদার যা ক্ষমতা মানুষকে চোখে ধুলাে দিয়ে বহু টাকা রোজকার করতে পারেন, কিন্তু প্রয়ােজনের বেশি রােজগারের তাগিদে তার নেই।আবার যেদিন রােজগার হয় না, সেদিন খালি হাঁড়িতে জল
ফুটিয়ে রান্নার অভ্যাসটাকে জিয়ে রাখেন। পঞ্চমত, হরিদা সৎ এবং | নির্লোভ মানুষ। জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীরূপী হরিদা একশাে
একটাকা প্রণামী ফিরিয়ে দিয়েছেন। ইচ্ছে করলে আরও অনেক টাকা সেখান থেকে রােজগার করতে পারতেন, ছােকরা বন্ধুরা বকশিসের কথা বললে তিনি জানান অন্য সময়ে বহুরূপীর বেশে গিয়ে সামান বকশিস নিয়ে আসবেন। ষষ্ঠত, সম্মানীয়ের সম্মান তিনি দিতে জানেন বহুরূপীর সাজে কোথাও গিয়ে তিনি মানীর মানহানি ঘটাননি। বন্ধুদের কাছে হিমালয় প্রত্যাগত সন্ন্যাসীর কথা শুনলে তার প্রতি সম্মান জানি তার পদধূলি নেওয়ার কথা বলেন।
নিষ্ঠাবান, নির্লোভ, দরিদ্র মানুষ হরিদা সংসার সমাজ সব কিছুর থেকে যেন কেমন নির্লিপ্ত থাকতেন। অবশ্য তাঁর জীবনের এই ট্র্যাজিডি জন্য অনেকাংশেই সমাজ দায়ী। বহুরূপীর প্রতি অবহেলা এ উপেক্ষাই বহুরূপী হরিদাকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।
৫। কম-বেশি ১২৫ শব্দে নিজের ভাষায় উত্তর দাও। (যে কোন একটি) ৪ x১ = 1
৫.১। এই মুহুর্তে তুমি আমার দরবার ত্যাগ করাে।' কাকে দরবার ত্যাগ করতে বলা হয়েছে? তাকে কেন দরবার ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে? নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের সিরাজদ্দৌলা নাট্যাংশে প্রধান চরিত্র সিরাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটসকে দরবার ত্যাগ করতে বলেছেন।
বণিকের ছদ্মবেশধারী ইংরেজ ভারতে উপনিবেশ করতে কলকাতায় ঘাঁটি স্থাপন করে। ইংরেজ শক্তি বৃদ্ধি করে সিরাজের দরবার থেকে অন্দরমহল সর্বত্র ষড়যন্ত্রের বিষ ছড়িয়ে দেয়। ইংরেজদের অভিপ্রায় দমন করতে সিরাজ কলকাতা জয় করেন। ইংরেজ ও সিরাজের মধ্যে সন্ধির শর্ত রক্ষার প্রতিভূ করে ওয়াটসকে মুর্শিদাবাদে রাখা হয়। দেখা যায় তারই মাধ্যমে দুরাত্মা ইংরেজ বাংলা দখলের ছক কষছে। ইতিমধ্যে ওয়াটসকে লেখা কাশিমবাজার কুঠির অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের গােপনপত্র এবং ওয়াটসের জবাবিপত্র নবাবের হস্তগত হয়। ষড়যন্ত্রের গভীরতা দেখে নবাব স্তম্ভিত হন। ওয়াটসন সৈন্য সমাবেশ করে বাংলায় এমন আগুন লাগাতে চান যা নাকি গঙ্গার সমস্ত জল দিয়েও নেভানাে যাবে না। নবাবের দরবারে বসেই ওয়াটস নবাবের বিরুদ্ধে ছুরি শানাচ্ছে। ওয়াটসের জবাবিপত্রে ছিল তারই নিশানা— নবাবের উপর নির্ভর করা অসম্ভব। চন্দননগর আক্রমণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। অপরদিকে ফরাসি প্রতিনিধি মসিয়ে লা ইংরেজ আগ্রাসনের প্রতিবিধান চেয়ে নবাবের দরবারে হাজির হন।ইংরেজের আগ্রাসন, ঔদ্ধত্য ও দুরভিসন্ধি দেখে নবাব ক্ষুব্ধ হয়েই | ওয়াটসকে দরবার ত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
৫২। জানি না, আজ কার রক্ত সে চায়। পলাশি, রাক্ষসী পলাশি।বক্তার এরূপ মন্তব্যের কারণ কী?
অথবা,
এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বক্তার যে মানসিক ভাবনার পরিস্ফুটন ঘটেছে, তা আলােচনা করাে।
উত্তর সংকেত:- বক্তা সিরাজদ্দৌলা। সিরাজদ্দৌলার রাজনৈতিক বিচক্ষণতার অভাবের কারণেই তার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ষড়যন্ত্রের কথা শুনেও যথা সময়ে যড়যন্ত্রকারীদের উপযুক্ত ব্যবস্থা না করে তাদের মানসিক পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছেন। (বিস্তারে)
অথবা
উত্তর সংকেত : ষড়যন্ত্রকারীদের মানসিক পরিবর্তনের চেষ্টা, লুৎফার কাছে পলাশির যুদ্ধ ও অবধারিত পরিণামে আতঙ্কিত নবাবের মুখ দিয়ে বের হয়েছে এমন করুণ আর্তনাদ।।
৬। কম-বেশি ১৫০ শব্দে নিজের ভাষায় উত্তর দাও। (যে কোনাে একটি)
৫x১ = ৫ ৬.১।
কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তাে আমার পা ধােয়া জল খাবে।'- উক্তিটি কার? উক্তিটি থেকে তার কোন মনােভাবের পরিচয় মেলে?
১+৪ = ৫
মতি নন্দীর কোনি’ উপন্যাসের থেকে গৃহীত পাঠ্য অংশে জুপিটারের প্রশিক্ষক ক্ষিতীশের শাসন ও বিদ্রুপ সহ্য করতে না পেরে অমিয়া ও বেলা নামে দু’জন সাঁতারু অ্যাপােলােতে যােগ দিয়েছিল সেখানে কোনিকে পেয়ে অমিয়া এই কথাগুলি শুনিয়েছিল।
অমিয়া কোনির চেয়ে প্রশিক্ষক ক্ষিতীশের উপরই বেশি ক্ষিপ্ত ছিল। যেহেতু প্রশিক্ষকের শাসন ও বিদ্রুপ সহ্য করতে না পেরে ক্লাব ছেড়েছে তার উপর তাদের উপর টেক্কা দেবে কোনি, এটা অসহ্য তাই কোনির উপরও তারা ক্ষিপ্ত। তাছাড়া এক ক্লাবের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য ক্লাব সদস্যদের সম্পর্ক সব সময়েই সাপে-নেউলেই হয়, এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। অন্যকে প্যাচে ফেলে, অকথা কু-কথা বলে, এমনকি প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে, অর্থাৎ যেমন করেই হােক নিজেকে এবং সেই সঙ্গে ক্লাবকে জেতাতে হবে এটাই ছিল অমিয়ার মূল উদ্দেশ্য। প্রশিক্ষক গুরু তার প্রতি যে সম্মান দেখানাে দরকার তা অমিয়া দেখাত না। তার ধারণা ছিল ক্ষিতিশবাবু কোনির উপরই বেশি জোর দিচ্ছেন ফলে অন্যেরা উপেক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া উপন্যাস নাটকে নায়ক-নায়িকার সব সময়ে একটা প্রতিপক্ষ (ভিলেন গ্রুপ) থাকবেই, তারা সব সময়ে অন্যায়ের পথ ধরে উপরে ওঠার চেষ্টা করবে। তাতে ক্ষণিকের জয় এলেও সামগ্রিকভাবে তাদের পরাজয় ঘটে। এক্ষেত্রে অমিয়াকে লেখক সেভাবেই তৈরি করেছেন।
৬.২। দারিদ্র্য আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে যে কোনির লড়াই তার বর্ণনা দাও।।

বস্তির এঁদো ঘরে দারিদ্র্য, বঞ্চনা আর ক্ষুধাকে সঙ্গী করে বেড়ে ওঠে কনকচাপা পাল ওরফে কোনি। কোনি জন্মগতভাবে দরিদ্র, তার উপর। সাত ভাই-বােন। বাবা মারা যাওয়ার পর তারা অথৈ জলে পড়ে। সংসারের দায় বড়াে দাদা একা সামলাতে পারে না বলে ছােটো। ভাইকে পনেরাে টাকা মাইনেতে চায়ের দোকানের কাজে ঢুকিয়ে। দেয়। ক্ষিতীশ সাঁতারের সঙ্গে সঙ্গে কোনির ভরণপােষণের ভার না নিলে কোনিকে সুতোকলে কাজ নিতে হত। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী দাদাও যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। কোনি দ্বিতীয় বার জীবনে ধাক্কা খায় । অবশ‍্য কোনিকে ক্ষিতিশের স্ত্রী তাঁর দর্জির দোকানে ফাই-ফরমাশ খাটার জন‍্য চল্লিশ টাকা মাইনের একটা কাজ দেয়। ক্ষিতিশের চোখে এক চ‍্যাম্পিয়ন সাঁতারু কোনি।