প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে যে অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে তা কতগুলি সুনির্দিষ্ট সুযোগসুবিধা ছাড়া বিকশিত হতে পারে না। এই সুযোগসুবিধাগুলি অধিকার নামে পরিচিত। অধ্যাপক হ্যারল্ড ল্যস্কিকে অনুসরণ করে বলা যায় যে, অধিকার হল সমাজজীবনের সেইসব সুযোগসুবিধা যেগুলি ছাড়া কোনো ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্বের সর্বোত্তম বিকাশ ঘটাতে পারে না।
নাগরিকরা রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করার বিনিময়ে রাষ্ট্রপ্রদত্ত এই সুযোগসুবিধা বা অধিকার ভোগ করে থাকে। পেরিক্লিসের গণতন্ত্রে, সফিস্টদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের ধারণায়, রোমে প্রথম যুগের প্রজাতান্ত্রিক আইনের শাসনে, মধ্যযুগের দাস বিদ্রোহে, ষোড়শ শতকে ইউরোপের নবজাগরণে ও সংস্কার আন্দোলনে, সপ্তদশ শতকের গৌরবময় বিপ্লবে, অষ্টাদশ শতাব্দীর শিল্পবিপ্লবে, আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং ফরাসি বিপ্লবে অধিকারের ধারণা মানবসভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নানাভাবে বিকশিত হয়েছে।
অধিকারকে মূলত দু-ভাগে ভাগ করা যায়--
(1) নৈতিক,
(2) আইনগত অধিকার ।
নৈতিক অধিকার সামাজিক ন্যায়নীতিবোধকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। এগুলি ভঙ্গ করলে রাষ্ট্র কোনো শাস্তি দিতে পারে না। অন্যদিকে, আইনগত অধিকার আইনের মাধ্যমে স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হয়। এগুলি লঙ্ঘিত হলে রাষ্ট্র শাস্তি দিতে পারে। আইনগত অধিকার প্রধানত চারভাগে বিভক্ত--
(1)পৌর বা ব্যক্তিগত অধিকার,
(2) রাজনৈতিক অধিকার,
(3) অর্থনৈতিক অধিকার এবং
(4) সামাজিক ও কৃষ্টিগত অধিকার।
1945 সালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে মানবাধিকার- সংক্রান্ত ধারণার উদ্ভব ঘটে। জাতিপুঞ্জের উদ্যোগে 1948 সালে গৃহিত হয় 'মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিশ্বজনীন ঘোষনা'। অবশ্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, মানবাধিকারের ধারণা বহু পূর্বে 'প্রাকৃতিক অধিকার তত্বে'র মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। মানবাধিকার এমন এক অধিকার যা জন্মসূত্রে সব মানুষের সমানাধিকার ও সমমর্যাদার নীতিকে ঘোষণা করে। প্রতিটি মানুষের আত্মমর্যাদাসহ জীবনধারণ, স্বাধীনভাবে বাঁচা এবং সমতা ও সমমর্যাদার অধিকার হল মানবাধিকার।
আধুনিক যুগে অধিকারের পাশাপাশি কর্তব্যের বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কর্তব্যহীন অধিকার বলে কিছু থাকতে পারে না। অনুরূপভাবে অধিকারহীন কর্তব্যও কাম্য নয়। রাষ্ট্র-ব্যবস্থায় উভয়ই একান্তভাবে অপরিহার্য। রাষ্ট্র যেমন নাগরিকদের জন্য অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে তাকে যথাযথভাবে সুরক্ষিত রেখে তার দায়িত্ব পালন করে, নাগরিকদেরও তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। অধ্যাপক হ্যারল্ড ল্যাস্কি বলেছেন, যে কর্তব্য পালন করবে না সে অধিকার ভোগ করতে পারবে না। প্রসঙ্গত বলা যায়, আমাদের দেশের সংবিধান যখন চালু করা হয়, তখন নাগরিকদের কর্তব্যের বিষয়টি সংবিধানে উল্লিখিত ছিল না। পরে 42তম সংশোধনীর (1976) সাহায্যে নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্যসমূহ সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা হল 11টি।
1945 সালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে মানবাধিকার- সংক্রান্ত ধারণার উদ্ভব ঘটে। জাতিপুঞ্জের উদ্যোগে 1948 সালে গৃহিত হয় 'মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিশ্বজনীন ঘোষনা'। অবশ্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, মানবাধিকারের ধারণা বহু পূর্বে 'প্রাকৃতিক অধিকার তত্বে'র মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। মানবাধিকার এমন এক অধিকার যা জন্মসূত্রে সব মানুষের সমানাধিকার ও সমমর্যাদার নীতিকে ঘোষণা করে। প্রতিটি মানুষের আত্মমর্যাদাসহ জীবনধারণ, স্বাধীনভাবে বাঁচা এবং সমতা ও সমমর্যাদার অধিকার হল মানবাধিকার।
আধুনিক যুগে অধিকারের পাশাপাশি কর্তব্যের বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কর্তব্যহীন অধিকার বলে কিছু থাকতে পারে না। অনুরূপভাবে অধিকারহীন কর্তব্যও কাম্য নয়। রাষ্ট্র-ব্যবস্থায় উভয়ই একান্তভাবে অপরিহার্য। রাষ্ট্র যেমন নাগরিকদের জন্য অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে তাকে যথাযথভাবে সুরক্ষিত রেখে তার দায়িত্ব পালন করে, নাগরিকদেরও তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। অধ্যাপক হ্যারল্ড ল্যাস্কি বলেছেন, যে কর্তব্য পালন করবে না সে অধিকার ভোগ করতে পারবে না। প্রসঙ্গত বলা যায়, আমাদের দেশের সংবিধান যখন চালু করা হয়, তখন নাগরিকদের কর্তব্যের বিষয়টি সংবিধানে উল্লিখিত ছিল না। পরে 42তম সংশোধনীর (1976) সাহায্যে নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্যসমূহ সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা হল 11টি।
No comments:
Post a Comment