রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় আইন, স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের ধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূদুর অতীতে গ্রিসের নগররাষ্ট্রগুলিতে সফিস্ট চিন্তানায়করা, রোমের স্টোয়িক দার্শনিক রা, প্লেটো ও অ্যরিস্টটল প্রমুখ এই সম্পর্কে তাদের মূল্যবান মতামত প্রকাশ করেন। পরবর্তীকালে উদারনীতিবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা, মার্কশীয় তাত্ত্বীকেরা এবং সাম্প্রতিককালে নয়া উদারনীতিবাদীরা আলোচ্য বিষয়গুলিতে উন্নততর ব্যখ্যা দিয়েছেন। সমাজবিজ্ঞানের একটি গতিশীল বিষয়রুপে রাষ্ট্রবিজ্ঞান একজায়গায় থেমে থাকতে পারে না, তাই আলোচ্য বিষয়গুলিকে নিয়ে চিরাচরিত ধারণা যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবর্তিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত বলা যায়, আইন, স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায়বিচার পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত । রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সার্বভৌমের আদেশকে আইন হিসাবে অভিহিত করেছেন, কিন্তু সেই সঙ্গে তারা একথাও বলেছেন যে, আইন শুধুমাত্র রাষ্ট্র কতৃক স্বীকৃত, ঘোষিত ও প্রযুক্ত হলেই চলবে না, তাকে ন্যায়সম্মত ও যুক্তিসংগত হতে হবে।রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সার্বভৌমের আদেশকে আইন হিসাবে আভিহিত করেছেন, কিন্তু সেই সঙ্গে তাঁর াা একথাও বলেছেন যে, আইন শুধুমাত্র রাষ্ট্র কতৃক স্বীকৃত, ঘোষিত ও প্রযুক্ত হলেই চলবে না, তাকে ন্যায়সম্মত ও যুক্তিসংগত হতে হবে। অন্যদিকে, সাম্য ছাড়া যেমন স্বাধীনতা অর্থহীন, তেমনি স্বাধীনতা ছাড়াও সাম্যও নিরর্থক হয়ে পড়ে। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সাম্যের বহু আগে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার দাবি ওঠে। প্রাচীন গ্রিসে এবং রোমে যখন দাসব্যবস্থার প্রচলন ছিল তখন সব মানুষকে সমান ভাবা হত না সেসময়ে সাম্যের চেয়ে স্বাধীনতার স্থান ছিল অনেক ওপরে । বস্তুতপক্ষে আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে(1776) এবং ফ্রান্সের মানব অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণায়(1789) সর্বপ্রথম সাম্য ও স্বাধীনতার সমন্বয়চিন্তা বাস্তবরূপ লাভ করে।
গণতন্ত্র একটি প্রাচীন ধারণা। গ্রীসের এথেন্সে 'গণতন্ত্র' কথাটি প্রচলিত ছিল।ভারতের প্রাচীনধর্মগ্রন্থগুলিতেও গণতান্ত্রিক আদর্শের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে ইউরোপের নবজাগরণের ফলে মধ্যযুগের শেষভাগে গণতান্ত্রিক আদর্শ ব্যপ্তি লাভ করে।একটি আদর্শ ধারণারূপে গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ লক্ষ্য করা যায় অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে। ফরাসি বিপ্লব, আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম গণতান্ত্রিক আদর্শ রূপায়ণে উল্লেখযোগ্য সোপানরুপে চিহ্ণিত হয়ে আছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপের উদারনৈতিক দর্শন গণতন্ত্রকে এক নতুন চেহারা দেয় যা উদারনৈতিক গণতন্ত্র নামে পরিচিত। রুশোর সাধারণ ইচ্ছার তত্ব, বেন্থায়ের হিতবাদ, মিলের ব্যক্তিস্ব্যাতন্ত্রবাদ, গ্রিনের প্রতিরোধের তত্ব, আ্যডাম স্মিথের বাণিজ্যনীতি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগের ধারণা উদারনৈতিক গণতন্ত্রকে সমৃদ্ধ করে।
সাম্প্রতিককালে গণতন্ত্রের শ্রেণিবিন্যাস করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডেভিড হেল্ড। তিনি তাঁর models of democracy গ্রন্থের ভূমিকায় এই মত প্রকাশ করেছেন যে-গণতন্ত্রের ইতিহাস বড়ো অদ্ভূত ও বিভ্রমকারী। প্রতিটি রাজনৈতিক ব্যাবস্থা নিজেকে গণতান্ত্রিক বলে দাবি করলেও তারা যা বলে আর যা করে তার মধ্যে বিপুল পার্থক্য রয়েছে। ফ্যসিবাদ ও ন্যাসিবাদ কিভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চেয়েছে, অত সুগভীর সামাজিক সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে গণতন্ত্র গড়ে উঠেছে, হেল্ড তা দেখিয়েছেন।
তত্বগত দিক থেকে গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত শাসনব্যবস্থা হল একনায়কতন্ত্র। একনায়কতন্ত্রের ভিত্তি রচনায় যেসব দার্শনিক ইন্ধন যুগিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জার্মান দার্শনিক হেগেল, নিট্সে এবং ট্রটস্কি। একনায়কতন্ত্রের মূল ভিত্তি হল রাষ্ট্রীয় শক্তি বা পশুবল। একনায়কতন্ত্রে রাষ্ট্র প্রধান , জনগন অপ্রধান। একনায়কতন্ত্রে রাষ্ট্রের উপকাষ্ঠে জনগনের স্বাধীনতা, স্বাতন্ত্র্য ও অধিকারকে বলি দেওয়া হয়। এখানে প্রথমে রাষ্ট্র , পরে জনগণ। একনায়কতন্ত্রে রাষ্ট্র হল সর্বাত্মক, সামগ্রিক ও সর্বশক্তিমান। প্রাচীন রোমে নিরো ও জুলিয়াস সিজারের রাজত্বে, ফ্রান্সে নেপোলিয়নের আমলে, ইতালিতে কাউন্ট ক্যভুর এবং বিংশ শতাব্দীতে জার্মানীতে হিটলার, ইতালিতে মুসোলিনি ও ফ্রান্সে ফ্রাঙ্কোর সাশনকালে একনায়কতন্ত্রে র উদ্ভব ঘটে।
গণতন্ত্র একটি প্রাচীন ধারণা। গ্রীসের এথেন্সে 'গণতন্ত্র' কথাটি প্রচলিত ছিল।ভারতের প্রাচীনধর্মগ্রন্থগুলিতেও গণতান্ত্রিক আদর্শের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে ইউরোপের নবজাগরণের ফলে মধ্যযুগের শেষভাগে গণতান্ত্রিক আদর্শ ব্যপ্তি লাভ করে।একটি আদর্শ ধারণারূপে গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ লক্ষ্য করা যায় অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে। ফরাসি বিপ্লব, আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম গণতান্ত্রিক আদর্শ রূপায়ণে উল্লেখযোগ্য সোপানরুপে চিহ্ণিত হয়ে আছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপের উদারনৈতিক দর্শন গণতন্ত্রকে এক নতুন চেহারা দেয় যা উদারনৈতিক গণতন্ত্র নামে পরিচিত। রুশোর সাধারণ ইচ্ছার তত্ব, বেন্থায়ের হিতবাদ, মিলের ব্যক্তিস্ব্যাতন্ত্রবাদ, গ্রিনের প্রতিরোধের তত্ব, আ্যডাম স্মিথের বাণিজ্যনীতি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগের ধারণা উদারনৈতিক গণতন্ত্রকে সমৃদ্ধ করে।
সাম্প্রতিককালে গণতন্ত্রের শ্রেণিবিন্যাস করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডেভিড হেল্ড। তিনি তাঁর models of democracy গ্রন্থের ভূমিকায় এই মত প্রকাশ করেছেন যে-গণতন্ত্রের ইতিহাস বড়ো অদ্ভূত ও বিভ্রমকারী। প্রতিটি রাজনৈতিক ব্যাবস্থা নিজেকে গণতান্ত্রিক বলে দাবি করলেও তারা যা বলে আর যা করে তার মধ্যে বিপুল পার্থক্য রয়েছে। ফ্যসিবাদ ও ন্যাসিবাদ কিভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চেয়েছে, অত সুগভীর সামাজিক সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে গণতন্ত্র গড়ে উঠেছে, হেল্ড তা দেখিয়েছেন।
তত্বগত দিক থেকে গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত শাসনব্যবস্থা হল একনায়কতন্ত্র। একনায়কতন্ত্রের ভিত্তি রচনায় যেসব দার্শনিক ইন্ধন যুগিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জার্মান দার্শনিক হেগেল, নিট্সে এবং ট্রটস্কি। একনায়কতন্ত্রের মূল ভিত্তি হল রাষ্ট্রীয় শক্তি বা পশুবল। একনায়কতন্ত্রে রাষ্ট্র প্রধান , জনগন অপ্রধান। একনায়কতন্ত্রে রাষ্ট্রের উপকাষ্ঠে জনগনের স্বাধীনতা, স্বাতন্ত্র্য ও অধিকারকে বলি দেওয়া হয়। এখানে প্রথমে রাষ্ট্র , পরে জনগণ। একনায়কতন্ত্রে রাষ্ট্র হল সর্বাত্মক, সামগ্রিক ও সর্বশক্তিমান। প্রাচীন রোমে নিরো ও জুলিয়াস সিজারের রাজত্বে, ফ্রান্সে নেপোলিয়নের আমলে, ইতালিতে কাউন্ট ক্যভুর এবং বিংশ শতাব্দীতে জার্মানীতে হিটলার, ইতালিতে মুসোলিনি ও ফ্রান্সে ফ্রাঙ্কোর সাশনকালে একনায়কতন্ত্রে র উদ্ভব ঘটে।
No comments:
Post a Comment