Tuesday, August 31, 2021

ভারতীয় সংবিধান কবে গৃহীত হয় এবং কবে থেকে পুরোপুরি চালু হয়? ভারতের সংবিধান সুপরিবর্তনীয়তা ও দুষ্পরিবর্তনীয়তার মিশ্রন ব্যাখ্যা করো।

 15. 

📒ভারতীয় সংবিধান :-1949 সালের 26 নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয় তা কার্যকর হয় 1950  সালের 26 জানুয়ারি । 

 📒 সংশোধন পদ্ধতির নিরিখে ভারতীয় সংবিধানের প্রকৃতি বিচার:-সংশোধন পদ্ধতির দ্বারা কোনো দেশের সংবিধানকে সুপরিবর্তনীয় এবং দুষ্পরিবর্তনীয় অ্যাখ‍্যা দেওয়া হয়। যে সংবিধানকে সাধারণ আইন পাশের পদ্ধতি অনুযায়ী সহজে পরিবর্তন করা যায় তাকে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। অন‍্যদিকে যে সংবিধান পরিবর্তন করতে যেখানে অপেক্ষাকৃত বিশেষ ও জটিল পদ্ধতির দ্বারা হয়ে থাকে তাকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। ভারতীয় সংবিধানে যে সুরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয়তার যে সংমিশ্রণ ঘটেছে তার ব‍্যাখ‍্যা ও বিশ্লেষণ করলেই ভালো ভাবে বোঝা যায়।

ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি:-
ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলি হল-
সরল পদ্ধতি, আংশিক জটিল পদ্ধতি এবং জটিল পদ্ধতি।
1)সরল পদ্ধতি:-সংবিধানের অন্তর্গত কয়েকটি বিষয়কে অত‍্যন্ত সরল পদ্ধতিতে
সংশোধন করা যায়। যেখানে সাধারণ আইন পাশের পদ্ধতিতে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের সাধারণ সংখ‍্যাগরিষ্ঠের মাধ‍্যমে সংবিধান সংশোশোধিত হয়। নতুন রাজ‍্যের সৃষ্টি বা পুরানো রাজ‍্যের সীমানা বা নাম পরিবর্তন, বিধান পরিষদ সৃষ্টি বা বিলোপ, সুপ্রিমকোর্টের কার্যাবলীর এলাকা সম্প্রসারণ প্রভৃতি বিষয় এই পদ্ধতিতে সংশোধীত হয়।

2)আংশিক জটিল পদ্ধতি :- সংবিধানের কিছু নির্দিষ্ট অংশের সংশোধনের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের মোট সদস্যদের অর্ধেকের বেশি এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস‍্যের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থনের প্রয়োজন হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে সংবিধানের তৃতীয় ও চতুর্থ পরিচ্ছেদে আলোচিত যথাক্রমে মৌলিক অধিকার ও নির্দেশমূলক নীতিগুলিকে পরিবর্তন বা সংশোধন করা হয়।
 
3) জটিল পদ্ধতি:-এই পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রথমে সংশোধনী প্রস্তাবটিকে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের মোট সদ‍স‍্যদের অধিকাংশ এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের দুই তৃতীয়াংশ কতৃক সমর্থিত হতে হবে। এরপর প্রস্তাবটিকে রাজ‍্যআইনসভার অনুমোদনের জন‍্য পাঠাতে হয়। এক্ষেত্রে অন্তত অর্ধেক রাজ‍্য আইনসভার অনুমোদন আবশ‍্যক। যে সমস্ত বিষয় এই পদ্ধতিতে সংশোধীত হয় তার মধ‍্যে রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ‍্যের মধ্যে আইন-সংক্রান্ত ক্ষমতার বণ্টন, কেন্দ্র ও রাজ‍্যের মধ্যে শাসন-সংক্রান্ত ক্ষমতার পরিধি প্রভৃতি।

উপসংহার:- ভারতের সংবিধান সংশোধন উপরোক্ত তিনটি পদ্ধতি পর্যলোচনা করলে জানা যায় যে, আমেরিকার মতো অতিমাত্রায় দুষ্পরিবর্তনীয় ও ব্রিটেনের মতো সুপরিবর্তনীয় কোনোটাই নয়। বরং এখানে দুরকমের সংশোধনীর সংমিশ্রণ ঘটেছে। তাই k. C whore এর মতে ভারতীয় সংবিধান হল একটি ভালমতো নির্দেশিত ও সমতাবজায়কারি সংবিধান।


+খসড়া কমিটি কয়েকজন সদস্যের নাম লেখ। অথবা ভারতের গণপরিষদ খসড়া কমিটি দুজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের নাম উল্লেখ করো। ভারতের সংবিধান রচনায় গণপরিষদের ভূমিকার মূল্যায়ন করো।অথবা সংবিধান প্রণয়নে গণপরিষদের ভূমিকার সীমাবদ্ধতা আলোচনা করো।

 14.

ভারতীয় গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন কতদিন ধরে কোথায় অনুষ্ঠিত হয়? ভারতের সংবিধান প্রণয়নে গণপরিষদের ভূমিকা আলোচনা করো।

 13. 

ভারতীয় গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন

ভারতীয় গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন ১৯৪৬-এর ৯ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়।

ভারতের সংবিধান প্রণয়নে গণপরিষদের ভূমিকা


প্রথম অধিবেশন: ১৯৪৬ সালের ৯ থেকে ২৩ ডিসেম্বর গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসে। মুসলিম লিগের সদস্যরা এই অধিবেশনে যােগ দেননি। এই অধিবেশনে ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ গণপরিষদের প্রথম স্থায়ী সভাপতি নির্বাচিত হন। এই অধিবেশনে জওহরলাল নেহরু ভারতবর্ষকে স্বাধীন সার্বভৌম সাধারণতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।


দ্বিতীয় অধিবেশন: গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশন ১৯৪৭ সালের ২১ জানুয়ারি শুরু হয় এবং ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তা স্থায়ী হয়। এই অধিবেশনে গণপরিষদের সহসভাপতি হিসেবে হরেন্দ্রকুমার মুখােপাধ্যায়কে নির্বাচন করা হয়।


তৃতীয় অধিবেশন: গণপরিষদের তৃতীয় অধিবেশন ১৯৪৭ সালের ২২ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এই অধিবেশনে যে কটি কমিটি গঠিত হয়, তার মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি হল—

  • (i) কেন্দ্রীয় সংবিধান সম্পর্কিত কমিটি এবং 

  • (ii) প্রাদেশিক সংবিধান সম্পর্কিত কমিটি।


চতুর্থ অধিবেশন: ১৯৪৭ সালের ১৪ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত গণপরিষদের চতুর্থ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই অধিবেশনে নতুন ভারতের জাতীয় পতাকা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটি অস্থায়ী কমিটি নিয়ােগের সিদ্ধান্ত হয়।


ইতিমধ্যে লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভাইসরয় পদে যােগ দেওয়ার পর ভারত বিভাগ ও ক্ষমতা হস্তান্তর সম্পূর্ণ হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে গণপরিষদের একটি বিশেষ অধিবেশন বসে।


পঞ্চম অধিবেশন: পঞ্চম অধিবেশনের সময় থেকে ভারতীয় গণপরিষদ স্বাধীনতা আইন অনুযায়ী সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন পরিষদের মর্যাদা অর্জন করে। পঞ্চম অধিবেশন থেকে গণপরিষদ সংবিধান রচনা ছাড়াও দেশের আইনসভা হিসেবে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পঞ্চম অধিবেশন ১৯৪৭ সালের ১৪ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই অধিবেশনের শুরুতে মাউন্টব্যাটেনকে স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল এবং পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়ােগ করা হয়। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় আইনসভা হিসেবে গণপরিষদের প্রথম অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন জি ভি মভলঙ্কর। একটি খসড়া সংবিধান প্রণয়নের জন্য এই অধিবেশনে খসড়া কমিটি গঠন করা হয়। ড. বি আর আম্বেদকর এই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। কমিটির অন্যান্য সদস্য ছিলেন আল্লাদি কৃষ্নস্বমী আয়ার, এন গােপালস্বামী আয়েঙ্গার, কে এম মুন্সি, সৈয়দ মহম্মদ শাহেদুল্লাহ, বি এল মিত্র, এবং ডি পি খৈতান। পরে ডি পি খৈতান ও বি এল মিত্র-র জায়গায় টি টি কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী ও এন মাধবরাও নির্বাচিত হন।


খসড়া কমিটি: খসড়া কমিটি ১৯৪৭ সালের ৪ নভেম্বর খসড়া সংবিধান রচনার কাজ আরম্ভ করে। পরিশেষে ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ভারতের সংবিধান গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি গণপরিষদের সর্বশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি স্বাধীন ভারতের সংবিধান কার্যকরী হয়।

+ভারতীয় সংবিধানের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

 11. 

গণপরিষদ কাকে বলে? গণপরিষদের সভাপতি কে ছিলেন? কোন তারিখে গণপরিষদে সংবিধান গৃহীত হয়েছিল? গণপরিষদের গঠন ও উদ্দেশ্য আলোচনা করুন। অথবা ভারতের গণপরিষদএর গঠন আলোচনা করো।

 12. 

গণপরিষদ


গণতান্ত্রিক দেশের সংবিধান জনগণের দ্বারা রচিত ও গৃহীত হয়। জনগণের পক্ষ থেকে সংবিধান রচনার গুরুদায়িত্ব যে সাংবিধানিক কমিটির মাধ্যমে সম্পাদিত হয় তাকে গণপরিষদ বলে।

গণপরিষদের সভাপতি ছিলেন ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ।

১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ভারতীয় সংবিধান গৃহীত হয়েছিল।

ভারতীয় গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন ১৯৪৬-এর ৯ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়।


গণপরিষদের গঠন


১৯৪৬ সালের ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা অনুসারে চারটি মূলনীতির ভিত্তিতে ভারতীয় গণপরিষদ গঠনের ব্যবস্থা গৃহীত হয়। সেই নীতিগুলি হল一


  • 1) ব্রিটিশশাসিত প্রদেশ ও দেশীয় রাজ্যগুলির জনসংখ্যার অনুপাতে গণপরিষদে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা।


  • 2)গণপরিষদের সমস্ত আসন সাধারণ (মুসলমান ও শিখ ছাড়া অন্য সব সম্প্রদায়), মুসলমান ও শিখ—এই তিন সম্প্রদায়ের মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন করা।


  • 3) প্রাদেশিক আইনসভাগুলিতে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের সদস্যদের একক হস্তান্তরযােগ্য সমানুপাতিক ভােটাধিকারের ভিত্তিতে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।


  • 4) দেশীয় রাজ্যগুলির লােকসংখ্যার অনুপাত অনুযায়ী গণপরিষদে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা।


ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী গণপরিষদের মােট সদস্যসংখ্যা ৩৮৯ স্থির করা হয়। ব্রিটিশ-শাসিত প্রদেশগুলি থেকে ২৯২ জন সদস্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে মুসলমানদের জন্য ৭৮টি, শিখদের জন্য ৪টি এবং সাধারণের অর্থাৎ মুসলমান ও শিখ ছাড়া অন্য সব সম্প্রদায়ের জন্য ২১০টি আসন নির্দিষ্ট করা হয়। এ ছাড়া অনধিক ৯৩ জন সদস্য দেশীয় রাজ্যগুলি থেকে এবং ৪জন সদস্য চিফ কমিশনার শাসিত প্রদেশগুলি থেকে নেওয়া হবে বলে স্থির করা হয়। ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৪৬ সালের জুলাই মাসে গণপরিষদ গঠনের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। চিফ কমিশনার-শাসিত প্রদেশগুলির চারটি আসন সমেত ব্রিটিশ ভারত থেকে মােট ২৯৬ জন প্রতিনিধির জন্য গণপরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দলগত বিচারে গণপরিষদ নির্বাচনে কংগ্রেস ৬৯ শতাংশ আসন লাভের মাধ্যমে নিরঙ্কুশ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করে। উপরন্তু, ভারত বিভাগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর মুসলিম লিগের প্রতিনিধিরা ভারতীয় গণপরিষদ থেকে পদত্যাগ করলে কার্যত পরিষদে কংগ্রেসের প্রাধান্য বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।


গণপরিষদের উদ্দেশ্য


গণপরিষদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি খসড়া সংবিধান রচনা করা, যা সামাজিক বিপ্লবের চরম লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। পণ্ডিত নেহরুর অভিমত ছিল, গণপরিষদের প্রধান কাজ হবে একটি নতুন সংবিধানের মাধ্যমে স্বাধীন ভারতবর্ষের ক্ষুধার্ত ও বস্ত্রহীন মানুষের জন্য অন্নবস্ত্রের সংস্থান করা এবং যােগ্যতা অনুযায়ী প্রতিটি ভারতবাসীর আত্মবিকাশের জন্য সর্বাধিক সুযােগের ব্যবস্থা করা। সভাপতি ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ ঘােষণা করেন, গণপরিষদের লক্ষ্য হবে দেশের সাধারণ নাগরিকদের দুঃখদারিদ্রের পরিসমাপ্তি ঘটানাে, বৈষম্য ও শােষণের অবসান ঘটানাে এবং সুন্দর জীবনযাত্রার উপযােগী পরিবেশ সৃষ্টি করা।

ভারতীয় সংবিধানের মুখ বন্ধ প্রস্তাবনার গুরুত্ব তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

 10. 

ভারতীয় সংবিধানের দর্শন যেভাবে প্রস্তাবনায় প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা করো।

 9. 

সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করো।

 7. 

সুপরিবর্তনীয় দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য



সুপরিবর্তনীয় সংবিধান হল সেই সংবিধান, যে সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায়। কিন্তু যে সংবিধানকে সংশােধন করার জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বনের প্রয়ােজন হয়, সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায় না, সেই সংবিধানকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। সুপরিবর্তনীয় দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে নিম্নলিখিত পার্থক্যগুলি লক্ষ করা যায়



সুপরিবর্তনীয় সংবিধান



·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায়

·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নমনীয় বলে সাধারণ আইনের তুলনায় সাংবিধানিক আইনের বিশেষ কোনাে মর্যাদা থাকে না

·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সংবিধান সভা বা কনভেনশন দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে রচিত না হয়ে প্রথা, রীতিনীতি, আইনসভা প্রণীত আইন ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠতে পারে

·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত বা অলিখিত দুইই হতে পারে। যেমনব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত এবং নিউজিল্যান্ডের সংবিধান লিখিত

·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে পরিবর্তন করা যায় বলে এরূপ সংবিধানে আইনসভার সার্বভৌমত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত

·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধানকে ইচ্ছামতাে সংশােধনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ নাগরিক অধিকারের ওপর সহজেই হস্তক্ষেপ করতে পারে

·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধান অলিখিত বলে অস্পষ্ট হয়

·         সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নমনীয় বলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সহজেই তাল মিলিয়ে চলতে পারে



দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান



·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসেরপদ্ধতিতে সংশােধন করা যায় না। এজন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়

·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায় না বলে সাংবিধানিক আইনের বিশেষ মর্যাদা থাকে

·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান, সংবিধান সভা বা কনভেনশন দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে রচিত হয়

·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত হবেই

·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানকে রক্ষার দায়িত্ব বিচার বিভাগের ওপর থাকে বলে এরূপ সংবিধানে আইনসভার পরিবর্তে বিচার বিভাগের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়

·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রশ্নে সুযােগ না থাকায় নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে

·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত বলে স্পষ্ট হয়

·         দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান অনমনীয় বলে অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে



মূল্যায়ন: সুপরিবর্তনীয় দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের পার্থক্য মূলগত নয়, মাত্রাগত। কেননা সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি নির্ভর করে প্রয়ােজনের ওপর। যেমনঅতিদুম্পরিবর্তনীয় হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ১৯৭১ সালেই ১০ বার সংশােধিত হয়েছিল। অন্যদিকে, ব্রিটেনের সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হলেও জনমতকে উপেক্ষা করে সেখানে সংবিধান সংশােধিত হয়নি৷