Tuesday, August 31, 2021

রাষ্ট্রের দুটি গৌণ বৈশিষ্ট্য লেখ। রাষ্ট্র ও অন্যান্য সংঘের মধ্যে মূল পার্থক্য কি? সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ কি একটি রাষ্ট্র?

 

14.

রাষ্ট্রের দুটি গৌণ বৈশিষ্ট্য

রাষ্ট্রের দুটো গৌণ বৈশিষ্ট্য হলো-স্থায়িত্ব আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

স্থায়িত্ব:- যে রাষ্ট্রের কোন স্থায়িত্ব নেই তাকে রাষ্ট্র বলা যায় না। সরকারের অস্তিত্ব ক্ষণস্থায়ী। আজ যে সরকার ক্ষমতায় আছে কাল তা নাও থাকতে পারে।কিন্তু রাষ্ট্র চিরস্থায়ী।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি:- অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর অন্যন্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে স্বীকৃতি না পেলে কোন রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রকৃত অর্থে রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হয় না।

রাষ্ট্র ও অন্যান্য সংঘের মধ্যে দুটি মূল পার্থক্য

সার্বভৌমত্ব:- রাষ্ট্র সার্বভৌম কিন্তু কোন সংঘ সার্বভৌম নয়।

নাগরিকত্ব:- কোন না কোন রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক অন্যদিকে যেকোনো সংঘের সদস্যপদ গ্রহণ ব্যক্তির ইচ্ছা সাপেক্ষ।


বিচার-বিশ্লেষণ:-

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জো একটি প্রতিষ্ঠান আবার রাষ্ট্রও একটি প্রতিষ্ঠান । সুতরাং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জো কে রাষ্ট্র বলা যাবে কিনা সে সম্পর্কে প্রশ্ন জাগে। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জো রাষ্ট্র কিনা সে সম্পর্কে মতামত দিতে হলে দেখা দরকার রাষ্ট্র গঠনের জন্য যে চারটি প্রধান নির্দিষ্ট থাকা দরকার তা জাতিপুঞ্জের আছে কি না।

রাষ্ট্র গড়ে ওঠার জন্য দরকার জনসংখ্যা কারণ জনসংখ্যা ছাড়া রাষ্ট্রের কল্পনা করা অসম্ভব কিন্তু সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সেই অর্থে কোন জনসংখ্যায় নেই তাই জনসংখ্যার বিচারে জনসংখ্যা না থাকায় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের রাষ্ট্র নয় আবার রাষ্ট্রপরে ওঠার জন্য দ্বিতীয় অপরিহার্য উপাদান হলো ভূখণ্ড সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের যেহেতু পৃথিবীর মানচিত্রে কোন অবস্থান নেই তাই এদিক দ দিয়ে ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জো কে রাষ্ট্র বলা যাবে না।

তৃতীয় অপরিহার্য উপাদান হলো সরকার যেখানে রাষ্ট্রের কল্পনা সরকার ছাড়া অসম্ভব কিন্তু জাতিপুঞ্জের কার্যাবলী পরিচালনার জন্য মহাসচিব এর নেতৃত্বে পরিচালকমণ্ডলী আছে অনেকে জাতিপুঞ্জের এই পরিচালক মন্ডলী কেই কেই সরকার বলে মনে করেন

রাষ্ট্র গঠনের জন্য সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সার্বভৌমিকতা যেখানে সার্বভৌমিকতা বলতে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত অপ্রতিহত ও অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতাকে বোঝানো হয় কিন্তু সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কতগুলি সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংগঠন তাই জাতিপুঞ্জের সদস্য রাষ্ট্র গুলির কোন নির্দেশ দিতে পারে না কেবল অনুরোধ করতে পারে সদস্য রাষ্ট্রগুলো সেই অনুরোধ মানতেও পারে আবার নাও মানতে পারে। সুতরাং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কোন সার্বভৌমিকতা নেই

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটা বোঝা যায় যে কোন সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র বলে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য চারটি উপাদান আবশ্যক যেখানে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের একটি মাত্র বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ সরকার আছে কিন্তু অন্য তিনটি উপাদান নেই তাই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের রাষ্ট্র বলা যাবে না।

No comments: